মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০১৪

আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি ...

পিতা'র কথা মনে হলে আমার বাড়ির উঠোন মনে পড়ে
বাড়ির উঠোন ... আশৈশব আমার আহ্লাদ যেখানে স্থান পেয়েছিল
উঠোন ... যে উঠোন আমাকে প্রথম প্রশ্রয় দিয়েছিল ... পা ফেলার, হাঁটতে শেখার।
সেই উঠোন থেকেই তো আমি জেনেছি, স্বদেশ কি করে রচিত হয়!
সেই উঠোন থেকেই আমি জেনেছি, নিশ্চিত ...
ভোরের শিশির কণা, আষাঢ়ের বৃষ্টিস্নাত জল, কাদা-ধূলি'র বসবাস!
উঠোন আমাকে এও জানিয়েছে, মাটির সঙ্গেই মানুষের সখ্য।
সেই মানুষের জন্ম-পরিচয়, সীমানা-পরিধি নিঃসীম আকাশ পেরিয়ে অসীমে।

পিতার কথা আমাকে মনে করিয়ে দেয় ...
গ্রীষ্ম-বর্ষা, শরৎ-হেমন্ত, শীত-বসন্ত
জীবনচক্রে, কালক্রমে এরা আমাকে আশ্রয় দেবেই
পিতার প্রশস্ত বুকের মত ঋতুগুলো আগলে রাখবে আমার যত ক্লান্তি।
আমাকে নিবিড় আলিঙ্গনে ঘুম এনে দেবে চোখে, পরম মমতায়।

পিতার কথা মনে হলে, আমার রোদ্দুর মনে পড়ে
দেবদারু গাছের মায়াময় ছায়ার আড়ালে আড়ালে আমার সঙ্গে হাঁটে যে অহর্নিশি।
আমাকে সাহস যোগায়, আমাকে তেজোদ্দীপ্ত করে ...
মিছিলের স্লোগানে বর্ণের গাঁথুনিতে রক্তে-অণুতে প্রাণ খুঁজে পায় শরীর আমার!

পিতার কথা মনে হলে আমার সবুজাভ দীঘি মনে পড়ে
আহত কিংবা তৃষ্ণার্ত, পীড়িত-ব্যথিত হলে সবুজাভ দীঘির ভেলায়
অশ্রুবিন্দু থেকে পানাফুল জন্মে ...
পৃথিবী বিস্মিত হয়ে থমকে দাঁড়িয়ে ... উঠোনের কাছে ফিরে আসে। 
বোঝাপড়া ১.

তিনটা সাদাফুল ফুটে থাকে
নতমুখ ... সেই সাদাফুলের কাছে ফিরে
সাদাফুল তার পাশে হারানো সবুজ নিয়ে 
নতমুখের মত নির্বাক।

বোঝাপড়া ২.

একটা পাখি সারাক্ষণ একা
আষাঢ়ের আঁধারে ভিজতে থাকে
নতমুখ ... সেই পাখির কাছে ফিরে।
কালো পাখি আষাঢ়ের আঁধার নিয়ে
নতমুখের মত নির্বাক।
ঘাসের পাখায় পা ফেলে ও মেয়ে হাঁটে, কথা বলে ফিসফিসিয়ে
আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলে ওকে বহুবার আমি দেখেছি
দুলতে দুলতে সে আপন মনে চলেছে শুধুই দূরে ...
আমি ওকে দূরেই যেতে দেখেছি।
ওকে আর ওই সবুজের মত কোমল ঘাস, যা কেবলি নদীর ধার ঘেঁষে
অগোচরে বেড়ে ওঠে, নিরব গন্ধে বুকের সোনালি নিঃশ্বাসের সঙ্গে করে মিতালি
সেই প্রান্তরে, খোলা হাওয়ায় ও মেয়ে হেঁটে হেঁটে দূরে যায় চলে।
আমার ঘুম ভাঙ্গা কুয়াশা কেটে যায় ওদের হৃদয়ঙ্গমতায়
এভাবে দূর থেকে ওদের মেঘ ছুঁয়ে ছুঁয়ে গল্প করতে দেখেছি আমি।
শুধু একবার রোদ পড়া বিকেলে আমার চোখে ওর চোখ পড়েছিল!