বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৩

সমুদ্র যখন নিরব হয় তাকে দেখেছ?
সারি সারি একগুয়ে ঢেউ প্রতিবার আছড়ে পড়ে
একবার, দুবার, তিনবার ...
একবার দুবার তিনবার।
মানুষ এসে চলে যায় তার সঙ্গে মৃদুমন্দ বাতাস।
সমুদ্রের তাতে চোখ নেই, নিরুত্তাপ!
কত জল নিয়ে অমন নিশ্চুপ হওয়া চলে?
আকাশ কখনো মেঘ রঙ, কখনো চলিষ্ণু মেঘ
নিয়ে খেলা করে। বৃষ্টি ঝরায়! 
বরাবর আকাশ ভালবেসেছি আমি,
ওখানে দেখোনি কত শোভা! সাদা মেঘ, কাল মেঘ, ছাই মেঘ
এমন কি রঙ্গে রঙ্গে হেসে ওঠা রংধনু!
কিন্তু সমুদ্রকে দেখেছ কখনো?
তুমি জেনেশুনে জেনেশুনে আমাকে সমুদ্র করে তুলছ
সমুদ্র করে তুলছ তুমি জেনেশুনে আমাকে ...
অথচ বরাবর আকাশ ভালবেসেছিলাম!
আচ্ছা, তুমি কি আকাশ বা সমুদ্র বোঝ?
আচ্ছা, তুমি কি মানুষ বোঝ? ...

মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৩

চিঠি পৌঁছুবে না,
আলিঙ্গনের অস্পৃশ্য রহস্য উঠোনে ডিগবাজি খাবে।
চিঠি পৌঁছুবে না,
উঠোন জুড়ে পায়চারি করবে ধূলো।

বিদায় বলবে না চিঠি, একার শব্দমালা
রাতজাগা চোখের ক্লান্তি দেখবে উঠোনের কোণ থেকে।
চিঠি উড়বে না আকাশে, মেঘ ছোঁবে না।

পরিচিত অন্দরে পুড়বে হৃদয় প্রকোষ্ঠে।
পুড়ে হবে খাক, পুড়ে অঙ্গার বিবর্ণ হবে।
দরজায় কড়া নাড়বে যে
নাম তার 'অপেক্ষা!' ...




মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০১৩

মৃত্যুর খুব কাছাকাছি গেলে পরে টের পাওয়া যায়, মানুষ মূলত একা
গ্যাস চালিত যান চালক যখন নিরীহ মানুষের আতংকিত ছুটোছুটি দেখে
পুলিশের হুঁশিয়ারী দেখে সাধারণের মতন একার ভালটা ভেবে
মাঝপথে নামিয়ে দিল ... আমি দেখলাম
প্রাণভয়ে মানুষ ছুটছে এদিক ওদিক ...
মৃত্যুভয় মানুষকে ক্ষুধাও ভুলিয়ে দেয় নাকি! ...
ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে ভাবছিলাম, এখন আমি কোন দিকে যাব!
গুলির আওয়াজ, দোকান বন্ধ করার শব্দ তারপর হিম নিরবতা।
এই নিরবতা বিলাসী আয়োজন করে একা সমুদ্র দেখতে যাওয়াকে তিরষ্কার করে। এই নিরবতা প্রিয় মুখগুলোকে মনের গহীন থেকে
চিড়ে বের করে আনে। মনে হয়, তোমরা হাসতে থেকো, ভালবাসতে থেকো, অধিকার করে রেখো প্রিয় স্বদেশ ...
তারপর আবার ফিরে যাওয়া একা রাস্তায়
কতগুলো দানবের হিংস্র আক্রমণের শংকা বুকে পুষে;
পুষে নিষ্কলংক ক্ষেদ, পুষে স্বপ্ন-পুরনো শকুনের হাত থেকে দেশ মুক্ত হতে দেখবার ... অথবা নিরাপদ আশ্রয় খোঁজা ... কিংবা ভেতরের সৈনিকটাকে অনাগত মৃত্যুকে প্রতিহত করবার সাহস যোগানোর!
মৃত্যুর খুব কাছাকাছি গেলে পরে টের পাওয়া যায়, মানুষ মূলত একা।

মার্চের ০২ তারিখে লেখা। আজ ব্লগে পোস্ট করলাম। 
 
সারারাত নির্ঘুম কাটালে পিনপতনের শব্দে নিরবতা ভাংবে না
রাতের সময়টাতে একা থাকে মানুষের নিরবতা
বাতাসে বাতাসে মিশে যায় একাকীত্ব, বেড়াতে বেরোয়!
রাতের সময়টাতে ইঁদুর ছোটে সদলবলে ...
তাদের সাথে হয়ত কিছু মানুষও এমন
আহারের নিত্য যোগাড়ের চিন্তায় নিষ্পেষিত যাদের পেশী ও মন!
তারাও কি বেঁচে থাকে না? নিঃশ্বাসের প্রয়োজনে হয়ত তারাও করে
হাসি আয়োজন ... ওভাবে কি বাঁচা যায়? কিংবা ওটাকে কি বলে বেঁচে থাকা?

বাঁচার জন্যে চাই উপলক্ষ্য এমন বা এক
যাতে মনে হবে, ঘুম ভেঙ্গে গেল আর ছুটলাম
পাখির ডানায় করে ছুটলাম ... নদীভ্রমণে
জেলেদের সাথে নিয়ে মাছ খুঁজে ফিরলাম বাড়ি,
মায়ের হাতের রসে মিশে গেল চুলোর হাঁড়ির স্বাদ!
বেঁচে থাকলাম কারণ, বাবা হাত বুলিয়ে দিল আদর
বলে দিল, রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করা শিখেছ বলেই
তুমি আমাদের সন্তান ...
ভাই এল পেছন থেকে, জড়িয়ে বলল, দিদি চল
ছবি তুলে আসি ... আজ তোকে নিয়ে যাব ফসলের ক্ষেতে
বহুদিন তুই সবুজ দেখিসনি, আমি তো তা জানি!

বেঁচে থাকা মানে কখনো কখনো প্রেমিকের রাগ আর ক্ষোভে
ঘামের গন্ধ লেপ্টে থাকা ... ভালবাসা ভালবাসা অনুভব!
চোখের ইশারায় নিরালায় ডেকে নিয়ে যাওয়া,
বুঝিয়ে দেওয়া, নিরবতায়ও থাকে দোলায়িত করার অসহ্য সুখ সুখ কৌশল।

ঘুম ভেঙ্গে গেলে যদি মনে পড়ে সকালের আলো
আমায় নিচ্ছে ডেকে, করেছে জাগ্রত সত্যি ...
মন যদি যোগাযোগ করে বলে
ওঠো, এবার তোমার সময় হয়েছে, উঠবার
যদি বুকের কোণে  বুঁদ হয়ে থাকে ব্যথা
অন্যায় অমান্য করার তেজ যদি সূর্য্যের মত হয়
ওটাকেই বেঁচে থাকা বলে!

যদি শত মানুষের ভিড় থেকে সমস্বরে চিৎকার ওঠে আকাশে স্বাধীনতার ...
তবে মনে পড়ে বেঁচে আছি ...