নস্টালজিয়া
-আচ্ছা, এই এলাকায় কদম গাছ কোথায় পাব?
লীলাবতির এমন প্রশ্নে রোকন বিস্মিত হয়ে গেছে। সে মনে করতে পারল না কখনো কেউ তাকে এমন উদ্ভট প্রশ্ন করেছে! ... তাই সে না শোনার ভান করল।
লীলাবতি এবার গলার স্বর একধাপ বাড়িয়ে জানতে চাইল ...
-এই যে ভাই, এই এলাকায় কদম গাছ কোথায় পাওয়া যাবে?
রোকন এবার মাথাটা কিঞ্চিৎ ডান দিকে ঘুরিয়ে বলল 'আফা, আমারে জিগান?'
-হ্যাঁ! ... আপনি ছাড়া আর তো কেউ নেই আশেপাশে! আর আমাকে দেখে কি আপনার পাগল মনে হচ্ছে যে একা একা কথা বলে? ... বলল লীলাবতি।
- জ্বে না আফা! তয় ফাষ্টে বুজিনাই, কি কইতে কি কমু, তাই কিছু কইনাই। ড্যাবড্যাব করে তাকায় রোকন পেছনে।
-আরে আরে সাবধানে যান, করছেন কি! দিলেন তো সব ভিজিয়ে!
-স্যরি, আফা ... ঝটপট বলে রোকন।
-অসুবিধা নেই, আচ্ছা, জানেন আপনারা যে, যখন তখন বৃষ্টি নামে, পর্দা কেন রাখেন না? একরাশ বিরক্তি নিয়ে প্রশ্ন করে লীলাবতি। ওর কালো ফ্রেইমের মোটা চশমার পেছনে ততোধিক কালো; পেলব; পুষ্ট ভ্রুযুগল বক্ররেখার মত হয়ে গেছে বিরক্তিতে। আর সে মনে মনে ইচ্ছে পোষণ করে, জিপ গাড়িটার কাঁচ সে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইঁট ছুঁড়ে ... চুড়মাড় ভেঙ্গে পড়ছে কাঁচ, আর চালকের মুখ পাংশুটে হয়ে গেছে। কিন্তু লীলাবতি জানে, ইঁট ছুঁড়ে মারতে সে পারবে না কোনদিন, তাই তার ভ্রুগুলো আরো বাঁকা হয়ে যায় ক্ষোভে। এই গাড়িওলা মানুষেরা খুব ইন্সেন্সিটিভ হয়, ভাবে লীলাবতি। ভাবতে ভাবতে হাত-পা ঝাড়া দিতে থাকে।
এর মাঝে বেশ অনেকটা রাস্তা পাড় করে এসছে রোকন, রিক্সা চলছে দারুণ গতিতে। ঝুম ঝুম বৃষ্টি পড়ছে খোলা রাস্তায়, সাত মসজিদ রোডে কোন জ্যাম নেই দুপুরের এই স্কুল ছুটির সময়টাতেও! ঠান্ডা হাওয়া মাধুর্য্য ছড়াচ্ছে লীলাবতির মনে, সে বৃষ্টির সৌন্দর্য্যে আনন্দিত হতে হতে হারায় ভ্রুর বক্রতা। ফুরফুরে হয়ে ওঠে মন তার, বৃষ্টিবাতাসের মত!
-লীলাবতি বলে, ভাই, বললেন না! কদম গাছ কোথায় মিলবে?
-আফা, আপনে কি ডাকায় নতুন আইসেন?
-উহু ... বলে লীলাবতি, তবে এই এলাকায় নতুন।
-আইচ্ছা, সামনেই একটা কদম গাছ পড়ব। যাইবেন?
-'হ্যাঁ, ওখানেই নিয়ে যান।' লীলাবতি এ বছর কদম দেখেনি। সে পুরো একটা বছর কদম কালের অপেক্ষায় থাকে, আজ সেই অপেক্ষা পূরণ হবার দিন, ভাবতেই ভাল লাগে তার। আনমনে প্রশ্ন করে রোকনকে, 'ভাই, আপনার নাম কি?' রোকন যেন আরো অবাক হয়। মুখে যদিও নাম বলে তার ... লীলাবতি থামে না, সে জানতে চায়, কোথায় তার বাড়ি, পড়াশোনা করেছে কিনা, বাড়িতে তার আর আছে কে কে? ... রোকন সব ঠিক উত্তর দেয় তার। শুধু কেন যেন তার বলতে ইচ্ছে করে না, এই আফার কাছে, ময়নার নাম (ময়না তার হবু বউ, এক বাড়িতেই থাকে)!
রিক্সা এসে থামে ধানমন্ডি সাতাশের মাঝামাঝি। 'এই পার্ক দইরা নাক বরাবর আইটা গেলে আফা দ্যাকবেন কদম গাস।' বলে বিরাট এক হাসি দেয় রোকন, তার কেন যেন মনে হয়, এমন সুখের কাজ করেনি সে জীবনে আর কোনদিন! ... লীলাবতি ভাড়া দিতে দিতে গলা চড়িয়ে প্রশ্ন করে, 'আচ্ছা রোকন ভাই, আপনি সারাদিনে কত রোজগার করেন?' ... তারপর রোকনের খোলা মুখ থেকে শব্দ বেরুবার আগেই বলে বসে, 'আমি যদি আপনাকে একদিনের খরচ দিয়ে দেই, আপনি আমার সঙ্গে এখন ওই কদম গাছের কাছে দাঁড়াবেন গিয়ে? ...
এভাবেই রোকন আর লীলাবতি কোন এক বৃষ্টি দুপুরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাক ভেজা হয়ে কদম দেখেছিল। লীলাবতি দেখেছিল কদমফুলের গা ধুয়ে নেমে আসা টুপটাপ জল, পাতার সবুজ আর রোকন দেখেছিল আফার চোখে মুখে ফুটে ওঠা সুখ সুখ অনুভূতি, বৃষ্টি ফোঁটায় স্নাত।
-আচ্ছা, এই এলাকায় কদম গাছ কোথায় পাব?
লীলাবতির এমন প্রশ্নে রোকন বিস্মিত হয়ে গেছে। সে মনে করতে পারল না কখনো কেউ তাকে এমন উদ্ভট প্রশ্ন করেছে! ... তাই সে না শোনার ভান করল।
লীলাবতি এবার গলার স্বর একধাপ বাড়িয়ে জানতে চাইল ...
-এই যে ভাই, এই এলাকায় কদম গাছ কোথায় পাওয়া যাবে?
রোকন এবার মাথাটা কিঞ্চিৎ ডান দিকে ঘুরিয়ে বলল 'আফা, আমারে জিগান?'
-হ্যাঁ! ... আপনি ছাড়া আর তো কেউ নেই আশেপাশে! আর আমাকে দেখে কি আপনার পাগল মনে হচ্ছে যে একা একা কথা বলে? ... বলল লীলাবতি।
- জ্বে না আফা! তয় ফাষ্টে বুজিনাই, কি কইতে কি কমু, তাই কিছু কইনাই। ড্যাবড্যাব করে তাকায় রোকন পেছনে।
-আরে আরে সাবধানে যান, করছেন কি! দিলেন তো সব ভিজিয়ে!
-স্যরি, আফা ... ঝটপট বলে রোকন।
-অসুবিধা নেই, আচ্ছা, জানেন আপনারা যে, যখন তখন বৃষ্টি নামে, পর্দা কেন রাখেন না? একরাশ বিরক্তি নিয়ে প্রশ্ন করে লীলাবতি। ওর কালো ফ্রেইমের মোটা চশমার পেছনে ততোধিক কালো; পেলব; পুষ্ট ভ্রুযুগল বক্ররেখার মত হয়ে গেছে বিরক্তিতে। আর সে মনে মনে ইচ্ছে পোষণ করে, জিপ গাড়িটার কাঁচ সে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইঁট ছুঁড়ে ... চুড়মাড় ভেঙ্গে পড়ছে কাঁচ, আর চালকের মুখ পাংশুটে হয়ে গেছে। কিন্তু লীলাবতি জানে, ইঁট ছুঁড়ে মারতে সে পারবে না কোনদিন, তাই তার ভ্রুগুলো আরো বাঁকা হয়ে যায় ক্ষোভে। এই গাড়িওলা মানুষেরা খুব ইন্সেন্সিটিভ হয়, ভাবে লীলাবতি। ভাবতে ভাবতে হাত-পা ঝাড়া দিতে থাকে।
এর মাঝে বেশ অনেকটা রাস্তা পাড় করে এসছে রোকন, রিক্সা চলছে দারুণ গতিতে। ঝুম ঝুম বৃষ্টি পড়ছে খোলা রাস্তায়, সাত মসজিদ রোডে কোন জ্যাম নেই দুপুরের এই স্কুল ছুটির সময়টাতেও! ঠান্ডা হাওয়া মাধুর্য্য ছড়াচ্ছে লীলাবতির মনে, সে বৃষ্টির সৌন্দর্য্যে আনন্দিত হতে হতে হারায় ভ্রুর বক্রতা। ফুরফুরে হয়ে ওঠে মন তার, বৃষ্টিবাতাসের মত!
-লীলাবতি বলে, ভাই, বললেন না! কদম গাছ কোথায় মিলবে?
-আফা, আপনে কি ডাকায় নতুন আইসেন?
-উহু ... বলে লীলাবতি, তবে এই এলাকায় নতুন।
-আইচ্ছা, সামনেই একটা কদম গাছ পড়ব। যাইবেন?
-'হ্যাঁ, ওখানেই নিয়ে যান।' লীলাবতি এ বছর কদম দেখেনি। সে পুরো একটা বছর কদম কালের অপেক্ষায় থাকে, আজ সেই অপেক্ষা পূরণ হবার দিন, ভাবতেই ভাল লাগে তার। আনমনে প্রশ্ন করে রোকনকে, 'ভাই, আপনার নাম কি?' রোকন যেন আরো অবাক হয়। মুখে যদিও নাম বলে তার ... লীলাবতি থামে না, সে জানতে চায়, কোথায় তার বাড়ি, পড়াশোনা করেছে কিনা, বাড়িতে তার আর আছে কে কে? ... রোকন সব ঠিক উত্তর দেয় তার। শুধু কেন যেন তার বলতে ইচ্ছে করে না, এই আফার কাছে, ময়নার নাম (ময়না তার হবু বউ, এক বাড়িতেই থাকে)!
রিক্সা এসে থামে ধানমন্ডি সাতাশের মাঝামাঝি। 'এই পার্ক দইরা নাক বরাবর আইটা গেলে আফা দ্যাকবেন কদম গাস।' বলে বিরাট এক হাসি দেয় রোকন, তার কেন যেন মনে হয়, এমন সুখের কাজ করেনি সে জীবনে আর কোনদিন! ... লীলাবতি ভাড়া দিতে দিতে গলা চড়িয়ে প্রশ্ন করে, 'আচ্ছা রোকন ভাই, আপনি সারাদিনে কত রোজগার করেন?' ... তারপর রোকনের খোলা মুখ থেকে শব্দ বেরুবার আগেই বলে বসে, 'আমি যদি আপনাকে একদিনের খরচ দিয়ে দেই, আপনি আমার সঙ্গে এখন ওই কদম গাছের কাছে দাঁড়াবেন গিয়ে? ...
এভাবেই রোকন আর লীলাবতি কোন এক বৃষ্টি দুপুরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাক ভেজা হয়ে কদম দেখেছিল। লীলাবতি দেখেছিল কদমফুলের গা ধুয়ে নেমে আসা টুপটাপ জল, পাতার সবুজ আর রোকন দেখেছিল আফার চোখে মুখে ফুটে ওঠা সুখ সুখ অনুভূতি, বৃষ্টি ফোঁটায় স্নাত।
1 ta ques... dhn 27 er majhamajhi ki asolei kodom gach ase? I knw its fiction ..... still feeling like to know. :)
উত্তরমুছুন