ভাবনা পর্ব
কোথায় যে পড়েছি, জীবনের সবচাইতে কষ্টের মুহুর্ত হচ্ছে যখন- সন্তান বুঝতে
পারে, তার মা-বাবা বুড়ো হচ্ছে! নেপিয়ার রোডে হাঁটতে গিয়ে আমার মনে হল, রোদের
স্তিমিত আলোয় ছায়ার আদলে আসলে যে পিছু পিছু আছে, সে আমি নাকি ক্ষয়ে যাচ্ছে আমার
সময়?
গ্রীষ্ম ফুরিয়ে এলো, ঝরে যাচ্ছে অজানা গাছের পাতারা। তারা সবুজে সাজবে
প্রতিবার, অনেকটা নিশ্চিন্তে মানুষ তাই ঘুমোয়, খোলা রেখে দরজা-জানালা। জ্যোৎস্নায়
গা ভাসালে ‘গড্ডালিকা প্রবাহ’ এর অর্থ মনে মনে ভেবে হাসি পায়। কতজনা আর পেরেছে
প্রবাহে ভাসাতে গা! আহা! রাস্তায় শুয়ে থাকা ইস্ট ইউরোপিয়ান ভিখিরিটাকে মাঝে মাঝে
স্বাধীন মনে হয়! ঈর্ষা কি এর প্রতিশব্দ হতে পারে?
২।
আমার জন্য মাঝরাত হতে পারে খাঁ খাঁ রোদে ফুটতে থাকা তপ্ত দুপুরও! হতে পারে
দিব্যি সকাল। জেগে উঠছে ঘুমন্ত টুকটুকে শিশু, তার নরম গাল টিউলিপ ফুলের মত রাঙা।
গেল বছর কাঠবিড়ালির ছবি তুলতে গিয়ে যাদের দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। আর সেই ফাঁকে
কাঠবিড়ালি মুখ লুকিয়েছিল গাছের আড়ালে। তারপর অনেকটা পথ হেঁটে আমার জন্য কোল পেতে
রাখা বেঞ্চিতে ডুবিয়েছিলাম কিছুটা ক্লান্তি। সেই ক্লান্তিতে পুরনো শহরের রাস্তারও
দাগ ছিল দগদগে, ঘাম আর ক্ষোভ! গুমোট গরম শেষে বিকেলের বৃষ্টির মত সতেজ ঘাসে পা
ফেলে ফেলে নিশ্চিন্তে কেউ বন্ধক রেখেছিল শরীরের ওম। এইসব সময়ও হয়ে যায় মাঝরাত।
কারণ মন তোমাকে মনে করিয়ে দেয়। তোমাকে মনে হওয়া মানে থমকে যাওয়া সব। মাঝরাত না হলে
মানাবে কেন বলো!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন