শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১১

নতুন কিছু লিখব করে
ভোর থেকে বসে আছি আলোর অপেক্ষায়।
সূর্য্য ডুবে গেলো, এ রাতের প্রথম প্রহরে
চাঁদের এক চিলতে বেড়ে ওঠা অবয়বে
পেলামনা আলোড়নে তুঙ্গস্পর্শী ডাক!

জানি, গ্লানি মুছতে তৎপর মুখরতায়
একেকটি দিন আসে তাই
দিনের হিসেবে গা ভাসিয়ে চলা ব্যাস্ততায়
নেই মুহূর্ত এমন
যাতে মানে নিতে পারি, নতুন তো আদতে মেলেনা কিছু।
আমরা ভুলতে চাই নিজের অপারগতা, তাই
পুুরনোর জোয়ারে আরেকটি  িদনের আগমন মিলিয়ে
মনে মনে নতুন সাজাই।

আয়নায় দেখা যায় কতদূর?
নতুন এলো বলে যত্রতত্র যাত্রায়
উন্মাদ নাচন শেষে, যার আছে ঘর, সে ফেরে।
যার নেই ঘর, সে শুয়ে পড়ে, পরিচিত গাছের আড়ালে।

নতুন দেখব বলে কাল ঠিক বেরুলে রাস্তার শেষে
ভিখিরীর নোনা চোখ দেখি
ভয় নিয়ে সয়ে যাই আসন্ন সংকট।
যে ধূলো বাতাসে ওড়ে,
তাকে তাড়িয়ে নেওয়া মানুষের দলে
জীবন খুঁজি, নতুন খুঁজি ...

মূর্খ তর্ক করে, সয়ে যাই
মূর্খ গালি দেয়, সয়ে যাই
মূর্খ বড়াই করে  ...
নতুন দেখব বলে
তার চোখ খুলে যাবে, সে আশায়
হারাই আশৈশব লালিত স্বপ্ন,
হারাই চেতনা, হারাই অভিমান, হতাশা ... ভুল!

নতুনের আস্বাদ পাব তাই,
ভোর থেকে বসে আছি ...
ভাবছি অন্যের মাঝে মিশে গিয়ে
ভাবছি নিজের সময় নিয়ে
নতুন তো মিলছে না কোন! ...

মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১১


কতকিছুই তো দেখবনা বলে পাশ কেটে যাই
শুনবনা ভেবে দৌড়ে দূরে সরি।
পারিনা ... পেছন থেকে ঠিক ধরে রাখে
কোন এক ভেতরের ডাক।
নিজেকে ভারমুক্ত যেমন করতে পারিনা
বিষাদের প্রতীয়মান অস্তিস্ব থেকে
তেমনই হয়না ভাল থাকা তাই।

আমার চোখ পড়ে যায়
মন পড়ে রয় ...
এতে যদি বল, আমি সহজে সুখী নই, মেনে নেব।
মেনে নেব, কারণ, ভেতরের ডাক উপেক্ষা করে
সুখী হতে পারিনি কখনো।
বরং, পরিচিত বিষাদেই বড্ড ভাল থাকি।
কিংবা এও ভেবে নিতে পারো,
তোমার অভ্যস্ত সুখে আমি আমাকে দেখিনা
পাইনা খুঁজে আমার অনভ্যস্ত সুখ।

এবার বল তবে, কি নিয়ে এলে?
কি দিতে পারো আমাকে তুমি?
সুখ? ... দুঃখ!!
পরিচিত অভ্যস্ততা ছাড়া
আমাকে আর কিছুই কি দেবার আছে তোমার?

বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১১

আকাশ দেখার সাধ নিয়ে
রয়ে গেলাম অন্তরালে।
এখন সেই অপূর্ণ চোখে লেপ্টে গেছে শূণ্যতা।
আকাশ কখনো নীল মনে হয়
আর শূণ্যতার রঙ দিতে পারিনা।

বিচ্ছিন্ন ও অভিন্ন একই বেঁচে থাকায়
কোথায় যে রয়ে গেছি আমি!
কোথায় আমি যে রয়ে গেছি,
আমি যে রয়ে গেছি কোথায়?

কখনো কোথাও কোনদিন দেখতে পেতাম
একটু অবসর, মুখোমুখি আমি আর আমি
জেনে নিতাম ঠিক কোথায়, কোন কোণে
কোন পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যায়
আমাকে ...

এবং বেঁচে উঠতাম ...



রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১১

আমাকে বিশ্রাম দাও ...
কেন বোঝনা, যে তাপে পোড়েনা চোখ
সে তাপে জ্বলছে মন, শক্তিমান দুরাশায়।
চোখকে সইতে দাও, মনকে থাকতে দাও
কিছুটা সময়, আরো কিছুটা সময় ধরে একা।
আমি যে মুখের মায়ায় বাঁধি ঘর
যার হাত ধরে কুড়াই শিশির
যে আমাকে করে সুন্দর, গড়ে মানুষে
তার দিকে তাকাবার আরো দাও
কিছুটা সময়!

এরপরে যেই ধূলো আসবে পথে
এরপরে ক্ষেতে ফুটবে সর্ষে ফুল
সেই পথে যাব ...
আরো আরো কথা বলে
ক্লান্তিতে, বিষাদ লুকিয়ে
হয়ে যাব প্রেম কতবার!

কিছুটা সময় ধরে থাকতে দাও একা
সুখ জেনে সরে যাই দুঃখের হ্রথে
তারো আগে, হয়ে নেই প্রস্তুত
একা দাঁড়াবার ...

শনিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১১

পৃথিবী'র ছায়া কি অপরূপ চাঁদের উপরে!
দেখলাম, অপলক চোখে ...
এই যে গ্রহণের কাল, এই সুবিশাল বাঁদুড়ের
এলোমেলো ডানা ঝাপটানো ...
অসীম আকাশ আর দূর থেকে ভেসে ওঠা নিয়ন আলোয়
তোমার অবিরাম বলে যাওয়া কথাগুলো
মুগ্ধতায় ভরে দিলো বহু পুরনো মনকে আমার!
এমন আর মিলেনাই আগে, মিলবেনা কোনোদিন আর, জানি।

জানি, গভীর তোমার চোখ ভরবেনা আর।

আমাদের একেক কথার ভিড়ে পড়ে রবে কতকাল
একেক নিঃশ্বাসের নিরব শাসনে
আসবে শীতের বিকেল।
যে মাঠের বুকে আজ বাড়েনাই ঘাস
আসবে, বেড়াবে সুনিশ্চিত।
নিমেষে কুড়িয়ে পাওয়া সোনালি সময়
আমাদের রঙ'এ প্রাণ ফিরে পায়
আমাদের মত আরো কোনো মানুষের মনে মনে
সাহসে, সৌন্দর্য্যে বুনে দেয় মুক্তির সাধ।

জানি, গভীর তোমার চোখ ভরবেনা আর।
জানি, গভীর আমার মন ভরবেনা কোনদিন আর,
তোমার পরেতে।





মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১১

তুমি আমাকে এগিয়ে নিলে পথ থেকে পথের ধাপে
হেঁটে যাওয়া আলোর শরীর, অন্ধকার থেকে আগলে।
এগিয়ে যাচ্ছি আমি ... যেন আরো একটু পথের পরেই
পেছনে তাকিয়ে দেখবো, হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছো!
কতদূর দেশে দেশে চলেছি আমি, আর তুমি দাঁড়ানো
সময়ের ঘূর্ণন থামিয়ে, নিজেকে থামিয়ে
আমাকে দেখছ শুধু, দেখছ ... আমি এ পথে, ও পথে
ক্লান্ত শরীরে, কখনো উচ্ছাসে আমার চোখ বেয়ে
পড়ে গেলো হঠাৎ এক ফোঁটা নোনতা আবেগ।
তুমি দেখছ, আমি মুছে ফেলছি আড়াল করে,
সামলে নিচ্ছি একা প্রচন্ড বাতাসে উড়ে যাওয়া চুল।
আমি আকাশ দেখে, মনের চোখে তোমার একা দাঁড়িয়ে থাকা ভেবে
হোঁচট খাচ্ছি, তুমি দেখছ ... এইমাত্র ঠোঁট কেটে তাজা রক্ত বেরুলো
মুছে নিতে তুমি, আমি ভাবছি। ভাবছি আমি তোমার একা দাঁড়িয়ে থাকা;
আর কিছু দেখা হচ্ছেনা আমার!
কানে ভেসে আসছে, অস্ফুট অথচ কখনো না ভুলে যাওয়া শব্দমালা
"তোমাকে কি অদ্ভূত সুন্দর লাগছে এখন, আজ!"

শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১১

বেশ ক'বার এলাম এই প্রান্তরে, হয়ত কিছুর আশায়।
কিছুই মিলছে না। উদ্ভ্রান্ত, অসহায় হয়ে বার বার
কার কাছে যাব? কোথায় যাব?
একসময় মনে পড়ে, নিজের একটা একা ঘরের শখ ছিল খুব!
এখন সেই ঘর মিলেছে, অথচ মিলছে না যেন কিছু আর!

রাত গাঢ় হলে পরে, সুনসান নিরব চাঁদ এসে আছড়ে পড়বে জানালা'র ফাঁক গলে
কিংবা পাশের বাড়ীর জানালা ফুঁড়ে বৈদ্যুতিক আলো
পর্দার এপাশে একেবারে একা আমি, পাশে কোন বই পড়ে রবে!
আর মেঝেদের বাড়াবাড়ি জেগে ওঠার প্রহরে আমার এপাশ, ওপাশ।
সেই ভৌতিক আলো আর আঁধারে আয়নায় ছায়াকেও মনে হয় অন্য কোন কেউ!
নিশ্বাস অসাড় করে চুপ হয়ে পড়ে থাকি, তাকাই না কোনোদিকে
এই করে কাটে নির্ঘুম বেপরোয়া রাত।

দিনের আলোয় তীব্র কটাক্ষ গায়ে মাখার প্রস্তুতি নিয়ে মেঝে বেয়ে
চলে আসি অন্য আমিতে। সারাদিন সভ্যতার পারদ গিলে খাই। গলা জ্বলে যায়।
ভেতরের আমিটাকে লুকাতে লুকাতে রাত থেকে, দিন থেকে, সভ্যতা থেকে
ক্লান্ত আমি ... কোথায় যাব? কার কাছে যাব?


শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১১

মেঘের মত দিনের রঙ পড়েছে
ঘরে ঝড়ের তান্ডবের ঠিক আগে
আনন্দ নিয়ে আসা অন্ধকার।
অগ্রহায়ণের কাল ...
ঝড়ের দিনের কথা নিয়ে এল মনে!
ফিঙ্গেদের আশ্রয় খুঁজে নেওয়া
পাখার পালকে পড়েছিল চোখ।
মেয়েটি একা, তার বসে থাকা নিয়ে
রাতের কালো আর ভোরের কুসুম আলো
শরীরে মাখিয়ে, সয়ে নিল গুমোট দুপুর।
বিকেলের মাঝে সে এসেছিল দুই রাত পরে
বেহিসেবী পা'য়ের পাতায় তখন
আন্দোলিত অলস নির্লিপ্ততা।
মিলেছিল মন, এমন সময়ে অসময়ে
মিলে গেছে ঝড়ের দিনের সাথে
মনেদের মিলে যাওয়া অপেক্ষার ক্ষণ।
তেমন দিনের কাছে গচ্ছিত আছে ঠিক
গোপন প্রণয়।
ছেলে আর মেয়েগুলো আলাদা বসতি গড়ে
কালের মতন।







প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে আমি অফিসে যেতাম
ঢাকা'র বিখ্যাত জ্যাম আর গ্রীষ্মের ভ্যাপসা দুপুরে
এ শহরের সবথেকে যাচিত রাস্তা পারিয়ে- সংসদ ভবনের
কতকিছু যে দেখার আছে দূর থেকে তার
তখনো ইচ্ছেটা মরেনি, তাকে ভেতর থেকে দেখার।
বাইরে থেকে যতটা দেখা যায়,
তাতে সবচাইতে আকর্ষ্ণীয় মনে হয়
আদরে ছেঁটে রাখা ঘাসগুলো।
তার ওপাশে যা হয়, তা আমার জানা নাই।
সম্ভবত ঘাসগুলো'র যেমন নেই অযাচিত বাড়ার অধিকার
আমাদের মত কিছু মানুষেরো এর থেকে বেশি জানা অযাচিত!
সে যা হোক, আমার সেই ঘাসের উপর পা ফেলে হাঁটতে ইচ্ছে করে খুব
আর এই ইচ্ছেটা মরেনি এখনো!
এই বিজয় এখনো অর্জিত হয়নি আমার!

...সংরক্ষিত এলাকা'র পরে যে ফুটপাথ
সেখানে এক জীবনের কথা বলি।
সে এক শিশু, অপার্থিব মায়াময় চোখ নিয়ে তার
থেমে থাকা জ্যামের ভিড়ে বসে থাকা আমার কাছে ছুটে আসতো।
আমি ক্ষিদে না পেলেও ছোট সেই শিশুটিকে
আরো একটু দেখব বলে
ওর ঝুলি থেকে কিনে নিতাম, ভাজা পপকর্ণ।
এভাবে রোজ  নাম না জানা শিশুটিকে দেখতাম আমি।
আর অসম্ভব উজ্জ্বল শিশুটি মলিন হতে শুরু করল
প্রতিদিন আমার যাওয়া আসার মাঝে।
থেমে থাকা জ্যামের ভিড়ের জৌলুস বাড়াচ্ছে নতুন গাড়ির সংখ্যা
সেইসাথে শিশুটিও বাড়ছে সংসার আর ঝুলির বোঝা কাঁধে নিয়ে
তার ক্রমাগত মলিন হতে যাওয়া চামড়া'র ভাঁজে
চাপা পড়ে গেছে থেমে যাওয়া শৈশব।
ওর চোখের সামনে এনে দিতে ইচ্ছে করে আজো
হাজারো প্রজাপতির গা'য়ে মাখা রঙ
ওকে মুক্ত দেখতে ইচ্ছে করে
এই বিজয় এখনো অর্জিত হয়নি আমার!






বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১১

দেখেছ আকাশ নীল, দেখেছ নীলের বিশ্বস্ততা
দেখেছ হঠাৎ কুড়িয়ে পাওয়া মানুষের পায়ের ভিড়ে
কোন এক জোনাকীর মৃদু প্রজ্জ্বলন
দেখার, বাঁচার আকুলতা কি অসীম তোমার!
যখনই ঠেকছ কোন মোড়ে যেতে ঘুরে
তখন করছ মনে ...
অস্তিত্বের গহ্বরে মিশে থাকা আমাকে।
তোমার কাছে এভাবে সত্য হয়ে যায়
আগের অধ্যায়ের আমার উপস্থিতি
প্রতি অধ্যায়ে এভাবে আমি মিশে আছি।

নীল দেখা হয়না আমার
কুড়িয়ে তুলিনা জোনাকীর আলো চোখ ভরাতে।
বেঁচে আছি, জীবনের সম্মান ফেরাতে
ঠেকছি না তাই ...
না ঠকানো কষ্টের সাথে তুমি আছ মিশে
সত্যে মিথ্যায় জড়িয়ে থাকো অসাধারণ
আমার এক আকাশে বিরামহীন গতি তোমার
আসতে হয়না তাই আলাদা করে।

বোধে নিরন্তর যাত্রা একইসাথে
এইতো অবলম্বন আমার
তুমি এখনো পাওনি তার সন্ধান।
আমাদের দু'জনের মাঝে কে কাকে বেশি ভালবাসে?




চেষ্টা করছি, চেষ্টা করছি, চেষ্টা করে চলেছি
ক্ষয়ে যাচ্ছি, ক্ষয়ে যাচ্ছি, ক্ষয়েই যাচ্ছি শুধু
স্বপ্ন যা বাঁচিয়ে রাখছে, সে আছে আড়ালে, গহীনে
সত্য যা কিছু, মানুষের তৈরি সেটা, কখনো কবিরও
তোমার সত্য, আমার সত্য কিংবা আমাদের সত্য
তোমার মিথ্যে, আমার মিথ্যে কিংবা আমাদের মিথ্যে
সবকিছু মূলত জীবনের সাথে সাথে আছে
জীবন কখনো মাঝরাতে দেখে চলা রাস্তায়
জীবন অধর্মে, ধর্মে, জীবন কর্মে বাঁচায়
সত্য কিংবা যা হয় মিথ্যে সে জীবনের সাথেই তো আছে
এক জীবন শেষ, তো শেষ হয় সত্য, মিথ্যে, ক্ষয়
কর্মের শেষ হয় জীবনের শেষের সাথে
চেষ্টার বিশ্রাম শুরু হয় ... জীবন খুব দীর্ঘ তো নয়।