রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৫

একা একা হাঁটলি বনবিড়াল?
ঘাসফুলের পাশে শুয়ে, 
পুরো সকাল রোদ নিয়ে গায়!
বিনম্র বাতাস ছুঁলো তোর ওমভরা শরীর
বাতাস ছুঁয়ে গেল ঘোলাটে চোখও ...
একাই হেঁটে গেলি ও পাড়ার আকাশ সীমায়!
একবারও দেখলি না পেছনে আমিও
মাস্তুল টেনে দাঁড়িয়ে ছিলাম
মধ্যরাত হে! তাকিয়ে আছ কেন? 
উপহাস নাকি তিরষ্কারে? 
আমি তো বুঝিনা অন্ধকার চোখে 
কতকাল পাড়ি দিয়ে এলে!
অগস্ত্যযাত্রায় কেবলই বিভ্রম টের পাই।
টের ও অনুভবের ভাব কি তুমি বোঝ?
তুমি কি বোঝ, মৌনতায় শিশির ফোটে তাই
তুমি আর গাঢ় অন্ধত্বে মাখামাখি আজীবন!
বিবসনা তুমি গায়ে যে জড়ালে
আভরণে লাজভোলা ঢেউ
করপূরের গন্ধের মত বাতাস সে ঢেউয়ে নাচে।
মধ্যরাত হে! আমার জ্যোৎস্নাশোভিত জল মনে আসে।
একলা সমুদ্রে ক্লান্ত লাগে এমন কি-
সবুজ বন আর হলুদের কাছাকাছি রুপালি আকাশ!
তুমি তবু ফিরেই তাকাও
আর আনকোড়া চোখে
বিচ্ছিরি শব্দেরা ওড়ে!
একদিন ঘাসেদের মাড়িয়ে, পেছনে আকাশ আর সমুদ্র ফেলে 
একদিন চেনা সব সুর ভুলে একা ... বিচ্ছেদের পথে ভেড়াব বিগত যৌবন
অশ্রুর ফোঁটাগুলো রেখে দিও হাতের ভাঁজে 
ভুলে যাবে সব জানি, নতজানু তাই ঈশ্বরের মত 
আমার রক্তাক্ত চোখে সুখ খুঁজোনা আর।
সবাই হেঁটে গেল দূরে- মানুষেরা, বৃষ্টির মত-পরোয়াহীন বজ্রপাতের মত- আয়েশী মেঘেদের মত- তুলো তুলো বাবলের মত। এক হাতে টুকরো কিছু ধ্বনি সাজানো ছিল ... মানুষেরা বিন্দুর মত হয়ে এলে চোখে, তারা ভাঁজ খুলে উঠে এলো, মেলে ধরল নদী ... পিপাসায় মনে রেখো, মনেরও প্রপাত আছে! পিপাসায় মনে রেখো, ঠোঁটের বেয়াড়াপনায় নদীরা মিলে যায়।
বুকের উত্থান পতনের মত, বৃষ্টি পড়ছে। 
অমীমাংসিত প্রতিজ্ঞার মত বৃষ্টি পড়ছে।
যত্নে রাখা বইয়ের ভাঁজে জমাট অভিমানের মত বৃষ্টি পড়ছে।
ঘুমুতে যাবার জন্য নিখোঁজ ছেলেটার মত বৃষ্টি পড়ছে। 
চাতকের মত একা বৃষ্টি পড়ছে।
বৃষ্টি পড়ছে, এর চাইতে সত্যভাষণ
পৃথিবীতে আর একটিও নেই!
তুই মাতাল হাওয়া
ঘুম না আসা রাত
অভিমানী কষ্টের
তফাৎ না বুঝে
ভালবাসা খোঁজা 
বেসামাল সুন্দর!

শুক্রবার, ১৫ মে, ২০১৫

ঢাকা এয়ারপোর্ট
যতবার দেখেছি দূর থেকে সোডিয়ামের আলোয় গাড়িগুলো যেতে যেতে ঝাপসা হয়ে যায়। মানুষের চোখের পাতায় রাতজাগা ক্লান্তি, ফেরার তাড়া, যেন জীবনের ওই মূহুর্তে আটকে গেল এক হাত আলো! 
ফুটপাথে যেই শিশুরা দাঁড়িয়ে থাকত, ফেরার পথে দেখতাম ওদের নেশা উবে গেছে! এখানে সেখানে এলোপাথাড়ি হয়ে, কাঁধে সেই এক ঝোলায় পুড়ছে, গেলো রাতে ফেলে দেয়া আয়েশি মানুষের উচ্ছিষ্ট! 
তখনো সকাল হতোনা! আমাদের যার যার বাড়ি, আমরা যাকে ঘর বলে মানি, সেখানে হয়তো বিছানা পেতে রাখত বুবু! ঘুমোব যে! কতদিন ঘুমাইনি আমরা! 
দলাতো না শুধু গাছগুলো। আমি ওই পথে আবার যখন যাব, জানি, তারা ওভাবেই থাকবে দাঁড়িয়ে, কেউ কি আমায় চিনে নিবে? ডালগুলো ... পাতারা দুই শীতে ঝরে, উড়ে গেছে জানি! কোথায় গেছে, তা যদিও বলতে পারি না! আঁচ করতে পারিনা। ঝড়ের কথা মনে পড়ে। খুব ঝড়ে স্মৃতির মত যেমন ধূলো উড়ে যায়! দেশ ছাড়িয়ে হয়ত তখন পাতারাও ওড়ে! ওড়ে না কি?
আর আছে গাড়িগুলো চলে গেলে পরে, স্টিলের পরতে লেখা মানুষের নাম। অ তে শুরু কোনটা আ তেও! দেখব খুঁজে, যদি পাই ... আমায় কি দাঁড়াতে দিবে ওরা! ওরা তো জানে না, সেই শূণ্য ভোরে আমার এক অধ্যায় পড়ে আছে! খোলা চোখে যতটুকু অন্ধকার গোপন করা যায়, তাতেই ওর ঠাঁই হবার কথা।

বৃহস্পতিবার, ১৪ মে, ২০১৫

ও মন দেখলি কি তুই সব?
রাস্তা শেষে যে মানুষ পায় পথ
সেই পথ তুই নিলি না হায় জেনে
ও মন, রাস্তা মানুষ হারায় অতঃপর।
মেঘ ছুটে যায়, রোদ পড়ে যায় জলে
চোখ লুকিয়ে কোথায় যাবি হেঁটে
জলের তোড়ে ভাসছে মেয়ের ছায়া
ও মেয়ে তোর হাতের ভাঁজে
পুরনো অক্ষর।
ঘর খুলে আয়, বৃষ্টি মাখিস গায়
চোখ মেলে দ্যাখ আকাশ জুড়ে ফুল
ফুলের বনে ভাসছে মেয়ের নাম
ও মেয়ে তোর বুকের ভাঁজে
নিঃশ্বাস অবিরাম।

সোমবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৫

আচ্ছা, এমন কেন হয়?
একলা দুপুর কোলে নিয়ে
নিঃসঙ্গতা বসে থাকে
আর ব্যস্ত নগরের ভিড়ে
পোড়ে অন্য মন?
হরেক রঙ এর পাখি
দল বেঁধে সারে স্নান
একত্রিত আকাশে ওড়ায় পাখা
মন নিঃসঙ্গতা নিয়ে ভাবে-
'কতকাল আকাশ দেখিনি!' 

বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৫

ঘর আর মানুষে এতো অভিমান!
দেয়ালে শরীর আবৃত করে
সে লুকায় সব অবহেলা।
যেন চোখের কোল জুড়ে বহমান
কাজলের একেক পরতে
মেঘের গল্প আছে পাতা।
ছায়ারা পাখিদের মত, উড়ে যায়/ 
এখানে রোদের নরম আলোয় আমি দেখি/ 
মায়াভরা তোমাদের মুখ/ 
দেখি, হাসির রেশে অশ্রুবিন্দু ক্রমাগত সোনালি হয়/
টিয়ে রং আবৃত গ্রাম্য বধুর নোলকে জড়ো হয়/ 
করজোড় মিনতি আমার/ 
আমি তোমাদের আগে পিছে, 
হৃদয়ের মাঝে এভাবেই থাকি/ 
ঠোঁট ফেটে চৌচির হলে/ 
শুকনো মাঠ মনে আসে/ 
ভরা বর্ষায় জলমগ্ন মেঘবালিকারা/ 
শব্দের অলক্ষ্যে আমাকে তোমাদের আর্দ্রতা দিয়ে যায় ...
রাত গভীর ও সুন্দর!/ 
গভীরতাহীন জল কতকাল আর দেখো তুমি?/ 
অথচ রাতের পাখায় ভর করে পান করো অভিমান পেয়ালা/ 
ঝেড়ে ফেলো দ্বেষ/ 
উপশম করো ক্লান্তির/ 
হয়ে ওঠো নতুন ভোর আরেক!/
রাত গভীর মানে নিশ্চিত ঘুমুচ্ছে পাখি/ 
তার ডানা ঝাপটানোর শব্দ/ 
তোমায় তাড়িত করবে না/ 
রাত আর পৃথিবীর তাবৎ আসরে তখন/ 
নতুন ভোরগুলো আড়মোরা ভাংছে/ 
ব্যস্ত রাস্তাগুলো যারা অনেকটা সময় বিশ্রাম নিল/ 
তারাও ভাংছে সম্মোহন/ 
জেগে উঠছে আর গায়ে মাখছে ভোরের পদক্ষেপ!/ 
রাত গভীর মানে তুমি প্রদক্ষিণ করে এসেছো/ 
শৈশব-কৈশোর-তারুণ্য/
 আর সূর্য উঠছে/ 
কারণ সূর্য উঠবেই!
সন্ধ্যার আলো থেকে দুপুরের অন্ধকার
ক্রমশঃ ক্ষীণ হয়ে আসে
থাকে কেবলই অবাক চোখের তারা
সে নিরব অতি, না বলা অনেক কথা।
হয়ত অনেক পথ চলা বাকি রেখে 
চুপ করে বসে থাকা তবু
দিন যাক, ভোর হোক আরো।
'ওগো দুখ জাগানিয়া, তোমায় গান শোনাব।'
#নিঃশ্বাসের ভিড় কড়া নাড়ে/
রাতের বাতাস সম্মোহনের সুর/ 
আঁধার ছুঁয়ে ঘুম পালানোর উত্সবে/ 
শহরের শেষ বাড়িটা/ 
ভিজছে একা বৃষ্টিতে!


#এই শহরে ভালবাসা কুসুম কুসুম. 
বৃষ্টি নামে আমায় ছাড়া. 
মেঘলা বাতাস/ ভিজছে ফুল, ভিজছে পাতা/ 
আলুথালু হৃদয়াকাশ

শুক্রবার, ৬ মার্চ, ২০১৫

মন আকাশের মতন মেখলা
তর্জনী ও মধ্যমা'র ভাঁজে কমনীয় যত্নে ধরে রাখা
ওষ্ঠের উত্তাপ।
কুয়াশার বৈতরণী ভেদ করে
একেকটি একা দাঁড়িয়ে থাকা গাছে, শেকড়ের ফাঁকে
দু'টো শালিক দেখতে চাওয়ার বাসনা।
ক্রমাগত রোদ কালো করে আসা সন্ধ্যায়
শান্ত জলের মত সবুজ আর মায়ামাখা চোখ
কাচের ওপারে যেখানে আর পৌঁছোয় না চিরকুট
হাওয়ায় ভেসে যায়, আজীবন যৌথ কাটানোর
ভয়াবহ সুপ্ত বাসনা।
মন ভাসমান গন্ধ তার গায়ে
লেপ্টে থাকা অযাচিত আদরের রেশ
আশ্রয়-প্রশ্রয়-খেয়ালের নিষেধ টপকে
কেবলই গুনগুন গেয়ে ওঠা গান।